রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
দুই দিনের সফরে আজ বরিশাল আসছেন অতিথি গ্রুপ অব কোম্পানির এমডি লায়ন সাইফুল ইসলাম সোহেল  পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার যুব মহিলা লীগ নেত্রী জুথি গ্রেফতার গৌরনদীতে তিন দফা দাবি আদায়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা প্রশাসনকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস পাওয়ায় গৌরনদীতে আনন্দ মিছিল বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ চারটি থানা এবং উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠন   আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশ শান্তিতে থাকবে, এটা অনেকেরই ভালো লাগেনা-এম. জহির উদ্দিন স্বপন তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন
করোনায় জাপানে মৃত্যুর হার খুবই কম কেন?

করোনায় জাপানে মৃত্যুর হার খুবই কম কেন?

করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। বিশ্বের অনেক দেশেই করোনায় মৃত্যুর হার বেশি হলেও জাপানে তা খুবই কম। দেশটিতে মৃত্যু হার কম কেন তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। আর এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি

জাপানে চলতি বছরের শুরুর দিকে মৃত্যুর হার দেশটির গড় মৃত্যুর হারের চেয়েও কম। তবে তা দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, হংকং এবং ভিয়েতনামের চেয়ে বেশি। আর এপ্রিল মাসে জাপানে স্বাভবিকের চেয়ে প্রায় ১ হাজার বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তারপরেও বছরের প্রথম দিকের হিসাবের ওপর ভিত্তি করে অনুমান করা হচ্ছে, জাপানে এ বছর মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২০১৯ এর থেকে কম হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

জাপানের করোনা প্রস্তুতি

গত ফেব্রুয়ারি মাসে উহানে করোনাভাইরাস যখন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে তখন চীন থেকে ভ্রমণের ব্যাপারে সারা বিশ্ব দেয়াল তুলে দিয়েছে, তখন জাপান তার সীমান্ত বন্ধ করেনি।

জাপানে মাথাপিছু বয়স্ক মানুষের সংখ্যা পৃথিবীর যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। দেশটির বড় বড় শহরগুলোতে জনসংখ্যা ব্যাপক- শহরগুলো মানুষের ভিড়ে ঠাসা। তাই এ দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ও বেশি করে মারা যাওয়ার মতো যথেষ্ঠ কারণ ছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখন পরামর্শ  দিলো, ‘টেস্ট, টেস্ট, টেস্ট’। তখনো জাপান এটি উপেক্ষা করেছে। এমনকি এখনো জাপানে পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র ৩ লাখ ৪৮ হাজার মানুষকে- যা জাপানের জনসংখ্যার মাত্র ০.২৭%।

ইউরোপসহ বিশ্বের নানা দেশে যখন লকডাউন দেওয়া হয়েছে, জাপানে সেভাবে কোনো লকডাউন হয়নি। শুধু এপ্রিলের শুরুতে জাপানের সরকার একবার জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। ঘরের ভেতর থাকার জন্য কোনো বাধ্যতামূলক নির্দেশ জারি হয়নি। শুধু অনুরোধ জানানো হয়েছিল এবং সেটা ছিল মানুষের স্বেচ্ছানির্ভর। এ জরুরি অবস্থা না মানলে কোনো আইনি ব্যবস্থা বা শাস্তির বিধান রাখা হয়নি।

আর এসব কারণেই সবার মনে প্রশ্ন জাপানে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কম কেন? যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত ৩০ জুন পর্যন্ত জাপানে করোনায় আক্রান্ত ২০ হাজারের নিচে, মৃতের সংখ্যা ১ হাজারেরও কম।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনেজা আবে গত মাসের শেষের দিকে যখন জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন, তখন তিনি বেশ গর্বের সঙ্গে এটাকে ‘জাপান মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন অন্য দেশের জাপান থেকে শেখা উচিত।

জাপানের বিশেষত্বটা যেখানে

জাপানের উপপ্রধানমন্ত্রী তারো আসো করোনায় কম মারা যাওয়ার জন্য জাপানিদের ‘আদর্শ আচরণের’ বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘জাপানের সাফল্যের কারণ নিয়ে অন্য দেশের নেতারা তাকে প্রশ্ন করেছিলেন। তার উত্তরকে অনেকেই অবশ্য কিছুটা তির্যক মনে করেন- আমি তাদের বলেছিলাম, ‘‘আপনার এবং আমার দেশের মানুষের আচরণের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।’’ তারা শুনে চুপ করে গিয়েছিলেন।’

জাপানিদের উঁচু জাতি হিসবে আখ্যায়িত করায় আসো সমালোচিত হয়েছেন। তবে জাপানের বহু মানুষ এবং অনেক বিজ্ঞানীও মনে করেন, জাপানের ক্ষেত্রে একটা বিশেষ কিছু আছে যা অন্যদের থেকে আলাদা। আর এই বিশেষ কিছুই তাদের করোনা থেকে রক্ষা করছে।

জাপানিদের কী বিশেষ ইমিউনিটি আছে?

টোকিও ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাতসুহিকো কোদামা জাপানের রোগীদের ওপর করোনাভাইরাসের প্রভাব নিয়ে কাজ করেছেন। তার ধারণা জাপানে হয়তো আগে করোনা হয়েছে। করোনা নয়, তবে একই ধরনের জীবাণুর অতীত সংক্রমণ জাপানের মানুষকে ‘ঐতিহাসিক ইমিউনিটি’ দিয়েছে।

তার ব্যাখ্যা, ‘মানুষের শরীরে যখন কোনো ভাইরাস ঢোকে তখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং তখন শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং ওই অ্যান্টিবডি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে।’

অ্যান্টিবডি হয় দুই ধরনের- আইজিএম এবং আইজিজি। আক্রমণকারী ভাইরাস নতুন না পুরনো তার ওপর নির্ভর করে কোনো ধরনের অ্যান্টিবডি সে ক্ষেত্রে কাজ করবে।

অধ্যাপক তাতসুহিকো কোদামা বলেন, ‘কোনো ভাইরাস যদি প্রথমবার আক্রমণ করে তখন প্রথমে সক্রিয় হয়ে ওঠে আইজিএম অ্যান্টিবডি, পরবর্তী সময়ে সক্রিয় হয় আইজিজি। আর কেউ যদি এমন ভাইরাসের শিকার হয়, যে ভাইরাস শরীরে আগেও আক্রমণ করেছিল, তখন সে ক্ষেত্রে ইমিউন ব্যবস্থা পরিচিত ভাইরাসের মোকাবিলায় দ্রুত সক্রিয় হয়ে আইজিজি অ্যান্টিবডি ব্যবহার করে।’

তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার ফলাফল দেখে আমরা খুবই অবাক হয়েছি যে সব রোগীর ক্ষেত্রে প্রথমেই দ্রুত সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে আইজিজি অ্যান্টিবডি, এরপর আইজিএম অ্যান্টিবডিও সক্রিয় হয়েছে কিন্তু সেটা পাওয়া গেছে খুবই সামান্য পরিমাণে। এর মানে হল আগে একই ধরনের ভাইরাস এদের সবার শরীরে ঢুকেছিল।’

তিনি আরও মনে করছেন, ওই এলাকায় যেহেতু আগে সার্স-এর সংক্রমণ হয়েছিল তাই শুধু জাপানেই নয় চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় মৃত্যুর হার অপেক্ষাকৃত কম দেখা গেছে।

তবে তার এই তত্ত্ব নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন অন্য বিশেষজ্ঞরা। লন্ডনে কিংস কলেজের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক পরিচালক এবং ব্রিটিশ সরকারের একজন সাবেক সিনিয়র উপদেষ্টা অধ্যাপক কেঞ্জি শিবুয়া বলেন, কোনো একটা অঞ্চলের মানুষের ইমিউনিটি তুলনামূলকভাবে বেশি থাকতে পারে, জিনগত কারণেও কারও কারও ইমিউনিটি বেশি থাকতে পারে।’ কিন্তু জাপানিদের ঐতিহাসিকভাবে বিশেষ কোনো জিন আছে এটা তিনি বিশ্বাস করেন না।

‘জাপান মডেল’

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গর্ব করে যে ‘জাপান মডেলের’ কথা বলেছেন, তার থেকে কী শিক্ষা নেওয়ার কিছু আছে? জাপান পৃথিবীর আর পাঁচটা দেশেরই মতো। রোগ বিস্তারের যে চেইন সেটাকে ভাঙতে পারার মধ্যেই রয়েছে এই রোগ ঠেকানোয় সাফল্যের চাবিকাঠি।

জাপানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হলো সেখানকার মানুষের মধ্যে নির্দেশ মানার সংস্কৃতি। সরকার জানে, তারা জনগণকে কিছু বললে জনগণ তা শুনবে এবং মানবে। জাপানের সরকার মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়নি, থাকা ভালো বলে পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু জনগণ ঘরে থেকেছে।

অধ্যাপক শিবুয়া বলছেন, ‘এটা বিরাট ভাগ্যের ব্যাপার। জাপানে মানুষকে ঘরে থাকতে বলাটা প্রকৃত লকডাউনের চেহারা নিয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধ জারি না করেই সরকার জনগণের সহযোগিতা পেয়েছে।’

জাপান সরকার মানুষকে বলেছে, নিজের যত্ন নিন, ভিড় পরিহার করুন, মাস্ক পরুন, হাত ধৌত করুন- মানুষ অক্ষরে অক্ষরে এই সব কটি পরামর্শ নিজেদের স্বার্থেই মেনে চলেছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com